হাতে-কলমে ইলেকট্রনিক্স শেখার নতুন টিউটোরিয়াল এ আপনাকে পুনরায় স্বাগতম । আগের টিউটোরিয়ালে আমরা একটি এলইডি লাইট জ্বালিয়ে ইলেকট্রনিক্স এর বিভিন্ন থিওরি বোঝার চেষ্টা করেছি । এই টিউটোরিয়ালে আমরা এলইডি এবং আরো কিছু উপকরণ ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা সম্পাদন করব এবং ইলেকট্রনিক্স এর বিভিন্ন উপকরণসমূহ কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করব ।
প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ
এই টিউটরিয়াল এর সার্কিট গুলো নির্মাণ করার জন্য আমাদের নিচের উপকরণসমূহ প্রয়োজন হবে
বিভিন্ন রং এবং আকারের এলইডি লাইট
ব্রেড বোর্ড
জাম্পার ওয়্যার
বিভিন্ন মানের রেজিস্টার
জাম্পার তার
সুইচ
ব্যাটারি ( ব্যাটারি না থাকলে ইউএসবি পাওয়ার সোর্স ব্যবহার করা যেতে পারে)
এল ই ডি
জাম্পার তার
ব্যাটারি
রেজিষ্টর
ব্রেডবোর্ড
কাজ ১ - সার্কিট নির্মাণ
আগের টিউটোরিয়ালে আমরা এলইডি ব্যবহার করে যে সার্কিট তৈরি করেছিলাম , সেটি পুনরায় তৈরি করব । এজন্য ব্রেড বোর্ডে আগের মত একটি এলইডি এর ছোট এবং বড় পা স্থাপন করব । পরে এই এলইডিকে ২২০ ওহম রেজিস্টর ব্যবহার করে ব্যাটারি এর সাথে সংযুক্ত করব । এক্ষেত্রে আমরা লক্ষ্য রাখবো যেন এলইডি এর পোলারিটি ঠিক থাকে , মানে এলইডি এর ছোট পা এর সাথে ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্ত এবং বড় পা এর সাথে ব্যাটারির পজিটিভ প্রান্ত সংযুক্ত থাকে ।
এখন আমরা ব্রেড board থেকে এলইডিকে সরিয়ে সেখানে নতুন রংয়ের একটি এলইডি স্থাপন করি এবং এখানে আলো কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে সেটি খাতায় লিখে রাখি । এভাবে বিভিন্ন রং এর এলইডি স্থাপন করার মাধ্যমে আলোতে কি ধরনের পরিবর্তন হয় সেটি খাতায় লিখে রাখি । সাথে সাথে এলইডি এর আকারের কারণে আলোর উজ্জ্বলতা কতখানি পরিবর্তন হচ্ছে সে বিষয়টি খাতায় উল্লেখ করি । এই কাজ করার জন্য আমরা নিজের মতো একটি টেবিল ব্যবহার করতে পারি
কাজ ২ - এল ই ডি সিলেকশন
উপরে আমরা বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন আকারের এলইডি ব্যবহার করে যে চার্ট তৈরি করেছি , সেটি ব্যবহার করে সবচেয়ে ভালো উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করে এমন একটি এলইডি সিলেকশন করি। এরপর রেড বোর্ড থেকে রেজিস্টর কে সরিয়ে সেখানে নতুন মানের রেজিস্টর স্থাপন করি । ইতিপূর্বে আমরা ২২০ ওহমের রেজিস্টর স্থাপন করেছি । এখন আমরা এই ২২০ ওহমের রেজিস্টরকে সরিয়ে এর চেয়ে ছোট এবং বড় মানের বিভিন্ন রেজিস্টর স্থাপন করি এবং এর ফলে আলো উজ্জ্বলতাতে কি ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় সেটি পর্যবেক্ষণ করি । পর্যবেক্ষণ এর তথ্য সমূহ কে লিপিবদ্ধ করার জন্য আমরা নিচের টেবিল ব্যবহার করি
রেজিস্টর এর মান পরিবর্তন করার ফলে এলইডি লাইটের উজ্জ্বলতা কিভাবে পরিবর্তন হয় , সে সম্পর্কিত বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে আমরা দেখতে পাবো যে , রেজিস্টর এর মান বৃদ্ধি হলে এল ই ডি লাইট এর উজ্জ্বলতা কমতে থাকে । আবার রেজিস্টর এর মান কমানো হলে এলইডি লাইট এর উজ্বলতা বাড়তে থাকে এবং যদি রেজিস্টর এর মান বেশি কমানো হয় , তবে এলইডি লাইট নষ্ট হয়ে যেতে পারে । এই বিষয়টি কেন হয়ে থাকে?
রেজিষ্টর 4k
রেজিষ্টর 1k
রেজিষ্টর 600 ohms
রেজিষ্টর 330 ohms
সার্কিটে রেজিষ্টর এর প্রয়োজনীয়তা
আমরা সার্কিটে যে ব্যাটারি বা পাওয়ার সোর্স ব্যবহার করেছি , সেটি মূলত ইলেকট্রন পাম্প হিসাবে কাজ করে থাকে । এখান থেকে ইলেকট্রন গুলো তারের মাধ্যমে এলইডি লাইটে প্রবেশ করে এবং এই এলইডি লাইট তার প্রয়োজন অনুসারে ইলেকট্রন গুলো ব্যবহার করে তা থেকে আলো তৈরি করে । অতিরিক্ত ইলেকট্রন গুলো এলইডি লাইটের নেগেটিভ পা দিয়ে বের হয়ে যায় । তবে এলইডি লাইট যে পরিমাণে ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে , তার পরিমাণ খুবই কম । এক্ষেত্রে ব্যাটারি বা পাওয়ার সোর্স অনেক বেশি ইলেকট্রন তৈরি করতে পারে এবং সেগুলো তারের মাধ্যমে এলইডি কম্পনেন্ট এ সরবরাহ করতে পারে । এখন এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন যদি এলইডি লাইটে প্রবেশ করে তবে সেটি পুড়ে যেতে পারে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে । এজন্য এখানে রেজিস্টর একটি বাধা হিসেবে কাজ করে থাকে এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রন গুলোকে আটকে দেয় এবং কম পরিমাণে ইলেকট্রন প্রবাহিত হতে দিয়ে তা এলইডি কম্পনেন্ট কে নিরাপদ রাখে । কারণ রেজিস্টর এর কাজ হচ্ছে ইলেকট্রন এর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা । এখন যদি আমরা বেশি মানের রেজিস্টর ব্যবহার করে থাকি তবে এটি খুব কম পরিমাণে ইলেকট্রন এলইডি লাইট মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে দিবে এবং এটি আলো তৈরি করার জন্য যথেষ্ট হবে না । তাই রেজিস্টর এর মান বাড়াতে থাকলে , আলো এর উজ্জ্বলতা কমতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে যদি রেজিস্টরের মান আরো বাড়ানো হয় , তবে আলো একবারে বন্ধ হয়ে যাবে । আবার অন্যদিকে যদি রেজিস্টরের মান কমানো হয় তবে অনেক পরিমাণে ইলেকট্রন এলইডি লাইট এর অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে এবং এটি এলইডি লাইটের উচ্চতা বাড়িয়ে দিবে । এর পরে যদি রেজিস্টর এর মান আরো কমানো হয়, তবে অনেক বেশি ইলেকট্রন এলইডি তে প্রবেশ করতে পারে এবং এটি এলইডি কে নষ্ট করে ফেলতে পারে।
এটি আমাদেরকে রেজিস্টরের ব্যবহার সম্পর্কে শিখতে সাহায্য করে এবং রেজিস্টর সার্কিটে কেন ব্যবহার করা হয় সে বিষয়টি হাতে-কলমে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে । সার্কিটে আরো বিভিন্ন কারণে রেজিস্টর ব্যবহার করা হতে পারে এবং এদের মধ্যেও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স কম্পনেন্ট এর মধ্য বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা এর জন্য রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়ে থাকে
কাজ ৩ - একাধিক এল ই ডি ব্যাবহার করে সিরিজ সার্কিট নির্মান
এখন আমরা একাধিক এলইডি ব্যবহার করে সার্কিট নির্মাণ করব । এজন্য আমরা এলইডি গুলোকে সিরিজে সংযুক্ত করব । এই কাজটি করার জন্য আমরা রেডবোর্ডে একটি এলইডি প্রবেশ করাই এবং এর পজেটিভ পা এক সারিতে এবং নেগেটিভ বা অন্য সারতে প্রবেশ করাই।
এরপর দ্বিতীয় আরেকটি এলইডি সংগ্রহ করি এবং প্রথম এলইডি এর নেগেটিভ পা এর সাথে দ্বিতীয়এলইডি এর পজিটিভ পা সংযুক্ত করি।
এরপর তৃতীয় আরেকটি এলইডি সংগ্রহ করি এবং একইভাবে দ্বিতীয় এলইডি এর নেগেটিভ বা এর সাথে তৃতীয় এলইডি এর পজেটিভ পা সংযুক্ত করি।
এরপর প্রথম এলইডি এর পজিটিভ বা এর সাথে ২২০ ওহম এর রেজিস্টর সংযুক্ত করি । সর্বশেষে রেজিস্টর এর অপরপ্রান্ত এর সাথে ব্যাটারি এর পজিটিভ প্রান্ত সংযুক্ত করি এবং তৃতীয় এলইডি এর নেগেটিভ বা এর সাথে ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্ত সংযুক্ত করি ।
এরপর কানেকশন সমূহ চেক করি এবং পাওয়ার অন করি। সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা রেজিস্টর গুলোকে জ্বলতে দেখব । তবে আমরা পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাবো যে এই রেজিস্টারগুলো কিছুটা কম উজ্বলতা প্রদর্শন করছে । আমরা আরো দেখতে পাবো যে প্রথম এলইডি যে উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করছে , দ্বিতীয় এলইডি তার চেয়ে কম উজ্জ্বল এবং সর্বশেষে তৃতীয় এলইডি সর্বনিম্ন উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করছে ।
আমরা এখানে যে কানেকশন ব্যবহার করেছি সেটিকে ইলেকট্রনিক্স এ থিওরি অনুসারে সিরিজ কানেকশন বলা হয় । এর মাধ্যমে বিভিন্ন কম্পনেন্ট সমূহ সিরিজে সংযুক্ত থাকে । এর ফলে ইলেকট্রন সমূহ প্রথম উপকরণ এর মধ্য প্রবেশ করে এবং এরপরে দ্বিতীয় এবং এরপর তৃতীয় এভাবে সবগুলো উপকরণ এ প্রবেশ করে । এর ফলে প্রথম কম্পনেন্ট যে পরিমাণ ইলেকট্রন পায় , দ্বিতীয় কম্পনেন্ট এর চেয়ে কম ইলেকট্রন পেয়ে থাকে । যেমন আমাদের এখানে প্রথম এলইডি যে পরিমাণে ইলেকট্রন পাচ্ছে , দ্বিতীয় এলইডি তার চেয়ে কম ইলেকট্রন পাচ্ছে এবং তৃতীয় এলইডি সর্বনিম্ন ইলেকট্রন পাচ্ছে ।
কারণ প্রথম এলইডি তার আলো তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন ব্যবহার করার পরে বাকি এলইডি গুলোকে ছেড়ে দিচ্ছে এবং এগুলো দ্বিতীয় এলইডি ব্যবহার করছে । এরপর দ্বিতীয় এলইডি তার আলো তৈরি করার জন্য ইলেকট্রন ব্যবহার করার পরেই অতিরিক্ত ইলেকট্রন ছেড়ে দিচ্ছে এবং সর্বনিম্ন সংখ্যক ইলেকট্রন তৃতীয় এলইডি ব্যবহার করছে । এজন্য তৃতীয় এলইডি এর মধ্যে ইলেকট্রন প্রবাহ কম হবার কারণে এটি সর্বনিম্ন উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করছে ।
কাজ ৪- একাধিক এল ই ডি ব্যাবহার করে প্যারালাল সার্কিট নির্মান
আমরা এখন নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে এলইডি লাইট গুলোকে সংযুক্ত করব , যেন সবগুলো লাইট সমান উচ্চতা প্রদর্শন করে জ্বলে ওঠে । এজন্য আমরা প্রথম এলইডি কে ব্রেড বোর্ডে স্থাপন করি এবং এর পজেটিভ পা কে এক সারিতে এবং নেগেটিভ পা কে অন্য সারিতে প্রবেশ করাই ।
এরপর দ্বিতীয় এলইডি এর পজিটিভ প্রান্ত এর সাথে প্রথম এলইডি এর পজেটিভ প্রান্ত সংযুক্ত করি এবং প্রথম এলইডি এর নেগেটিভ প্রান্তকে দ্বিতীয় এলইডি এর নেগেটিভ প্রান্ত এর সাথে সংযুক্ত করি।
সর্বশেষে একইভাবে তৃতীয় এলইডি এর পজিটিভ প্রান্তকে, প্রথম এবং দ্বিতীয় এলইডি'র পজিটিভ প্রান্ত এর সাথে সংযুক্ত করি এবং নেগেটিভ প্রান্তকে, প্রথম এবং দ্বিতীয় এলইডি এর নেগেটিভ প্রান্ত এর সাথে সংযুক্ত করি ।
এরপর সকল এলইডি এর পজিটিভ প্রান্ত এর সাথে ২২০ ওহমের রেজিস্টর সংযুক্ত করি । সর্বশেষে রেজিস্টর এর অপরপ্রান্তকে ব্যাটারির পজিটিভ প্রান্ত এর সাথে সংযুক্ত করি এবং এলইডি গুলোর নেগেটিভ প্রান্তকে ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্ত এর সাথে সংযুক্ত করি ।
সার্কিট এর কানেকশন চেক করি এবং সার্কিটের পাওয়ার অন করি । সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা দেখতে পাবো যে সবগুলো এলইডি জ্বলে উঠেছে এবং সবগুলো এলইডি এর উজ্জ্বলতা প্রায় সমান আছে ।
আমরা এখানে যে পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে সার্কিট এর উপকরণগুলোকে সংযুক্ত করেছি সেটি ইলেকট্রনিক্স এ থিওরি অনুসারে প্যারা। সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হয় । এই সংযোগ এর অংশ হিসেবে সকল উপকরণগুলোকে সংযুক্ত করা হয় এবং সকল উপকরণ এর মধ্য সমান সংখ্যক ইলেকট্রন প্রবেশ করে থাকে । এর ফলে সকল কম্পনেন্ট সমান সংখ্যক বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে এবং এখানে প্রতিটি এলইডি এর অভ্যন্তরে সমান ভাবে একই সাথে ইলেকট্রন প্রবেশ করছে এবং এর ফলে সব উপকরণগুলো সমান উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করছে ।
কাজ ৫ - সার্কিট ড্রইং করা
আমরা এই প্রজেক্টে সার্কিট নির্মাণ করার জন্য যে উপকরণগুলো ব্যবহার করেছি সেগুলো কে বিভিন্ন চিহ্ন এর মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। সার্কিট ডিজাইন করার জন্য বা অন্যের ডিজাইন করা সার্কিট বোঝার জন্য এই চিহ্নগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । ইলেকট্রনিক্স শেখার জন্য আমাদের অবশ্যই এই চিহ্নগুলো শিখতে হবে এবং এই চিহ্নগুলো ব্যবহার করে কিভাবে সার্কিট ডায়াগ্রাম তৈরি করতে হয় বা চিহ্নগুলোকে আরো কিভাবে বহুমুখী ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে হবে । আমরা এখানে নিচের উপকরণগুলো ব্যবহার করেছি এবং প্রতিটি উপকরণ এর যে চিহ্ন আছে সেগুলো নিচের টেবিলে দেখানো হয়েছে
এই চিহ্নগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা সার্কিট ডায়াগ্রাম অংকন করতে পারি । যেমন আমরা যে এলইডি এবং রেজিস্টর ব্যবহার করে এই টিউটোরিয়াল এ প্রথম সার্কিটটি নির্মাণ করেছি , তার ডায়াগ্রাম তৈরি করার জন্য প্রথমে , এক নাম্বার এলইডি এর চিহ্ন বসাই । এখানে লক্ষ্য করে দেখব যে এলইডি চিহ্ন এর একপাশে একটি লম্বা দাগ আছে । এই লম্বা দাগ দ্বারা এলইডি এর ছোট পা ক্যাসফোর্ড বা নেগেটিভ পা কে চিহ্নিত করা হয় । এর ফলে এই চিহ্নের যে পাশে লম্বা উলম্ব বা খাড়া দাগ আছে সেটি নেগেটিভ পা এবং অপরপ্রান্ত পজিটিভ পা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে ।
এরপর দ্বিতীয় এলইডি এর চিহ্ন স্থাপন করি যা প্রথম এলইডি এর মতই । এরপর প্রথম এলইডি এর নেগেটিভ পা কে দ্বিতীয় এলইডি এর পজেটিভ পা এর সাথে সংযুক্ত করার জন্য , তারের চিহ্ন ব্যবহার করি । এই তারের চিহ্নটি একটি লম্বা লাইন এর মতো এবং এই লাইন ব্যবহার করে দুটো পাকে সংযুক্ত করি । এভাবে তৃতীয় এলইডি কে চিহ্ন এর সাহায্যে অঙ্কন করি
এবার ব্যাটারি এর চিহ্ন স্থাপন করি । লক্ষ করলে দেখা যাবে যে ব্যাটারি এর একপাশে একটি খাড়া উলম্ব বড় দাগ আছে এবং অন্য পাশে ছোট দাগ বিদ্যমান আছে । এখানে বড় দাগ দ্বারা পজেটিভ প্রান্ত এবং ছোট দাগ দ্বারা নেগেটিভ প্রান্ত বোঝানো হচ্ছে ।
প্রথম এলইডি এলইডি এর পজিটিভ প্রান্ত , ব্যাটারি এর পজেটিভ প্রান্ত এর সাথে তারের চিহ্ন দ্বারা সংযুক্ত করি এবং ব্যাটারির নেগেটিভ পা এর সাথে তৃতীয় এলইডি এর নেগেটিভ প্রান্ত সংযুক্ত করি ।
এরপর প্রতিটি চিহ্ন এর পাশে তার মান স্থাপন করি । যেমন রেজিস্টর এর সাথে ২২০ ওহম এবং ব্যাটারি এর সাথে নয় ভোল্ট ইত্যাদি চিহ্ন স্থাপন করি । এভাবে একটি সার্কিট ডায়াগ্রাম অংকন করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে এলইডি সমূহ কিভাবে একে অন্যের সাথে সংযুক্ত আছে এবং ব্যাটারি কিভাবে এই সকল উপকরণগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে
আমরা এই টিউটোরিয়ালে দ্বিতীয় যে সার্কিটটি নির্মাণ করেছি এবং যেখানে এলইডি গুলোকে প্যারালালী ভাবে সংযুক্ত করা হয়েছে , তার সার্কিট ডায়াগ্রাম অংকন করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করি । এজন্য একইভাবে এলইডি এর চিহ্ন গুলোকে স্থাপন করি এবং এগুলোকে ব্যাটারির সাহায্যে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করি । চিহ্নগুলোকে সঠিকভাবে সংযুক্ত করার পরে ডায়াগ্রামটি দেখতে নিচের মত হবে । এই ডায়াগ্রাম থেকে বোঝা যাচ্ছে যে কিভাবে ব্যাটারি থেকে বিদ্যুৎ এই সকল উপকরণসমূহ এর মধ্যে প্রবাহিত হচ্ছে এবং উপকরণগুলোতে শক্তি সরবরাহ করছে ।
এই টিউটোরিয়ালে আমরা সফলভাবে এলইডি কে বিভিন্নভাবে সংযুক্ত করার মাধ্যমে সার্কিট নির্মাণ সম্পর্কে জানলাম । এই টিউটোরিয়ালে আমরা রেজিস্টরের ব্যবহার সম্পর্কে জেনেছি এবং কিভাবে রেজিস্টার সার্কিটে কাজ করে থাকে সে সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেছে । সাথে সাথে এলইডি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা সিরিজ এবং প্যারালাল সার্কিট নির্মাণ করতে শিখেছি । সাথে সাথে আমরা সার্কিট ডায়াগ্রাম অংকন করার জন্য যে চিহ্নসমূহ আছে সেগুলো এর ব্যবহার শিখেছি এবং সার্কিট ডায়াগ্রাম অঙ্কন করার ব্যাসিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত হয়েছে । ইলেকট্রনিক্স শিক্ষা গ্রহন করা এবং ইলেকট্রনিক্স বেসিক জানার জন্য এগুলো আমাদের দরকার হবে। সাথে ইলেকট্রনিক্স উপকরন সমূহ ব্যবহার করে আমরা সার্কিট নির্মান বা diy প্রজেক্ট তৈরী করতে পারি, তা জানতে পারবো। এগুলো আমাদের ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট সর্ম্পুকে শেখার পাশাপাশি, ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে ট্রাবলশুটিং করতে সাহায্য করবে।
এই টিউটোরিয়ালে আমরা যে বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনেছি সেগুলো আমাদের ইলেকট্রনিক্স এর ব্যাসিক শেখার কার্যক্রম কে সহায়তা করবে । পরবর্তী টিউটোরিয়ালে আমরা ইলেকট্রনিক্স এর সাথে সম্পর্কিত ভোল্টেজ , কারেন্ট এবং রেজিস্টর এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো আরো বিস্তারিতভাবে জানবো । সে পর্যন্ত আপনার কৌতূহল বজায় রাখুন এবং সংযুক্ত থাকুন
এই টিউটোরিয়াল সমূহ হাতে-কলমে ইলেকট্রনিক্স শিখি বই এর একটি অংশ। আপনি যদি এই টিউটোরিয়াল গুলো পছন্দ করে থাকেন এবং ইলেকট্রনিক্স সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে সহজে হাতে-কলমে শেখার জন্য আরও সিরিয়াস মটিভেশন অনুভব পোষণ করেন , তবে অবশ্যই এই বইটি আপনাকে গুরুত্বপূর্ণভাবে সহযোগিতা করবে । এই বইয়ের সাথে ইলেকট্রনিক্স এর থিওরি এবং হাতে কলমে বিষয় শেখার জন্য বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করা হয়েছে । এই বইটা কিভাবে ইলেকট্রনিক প্রজেক্ট ডিজাইন করা যায়, কিভাবে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায় , সে সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা ধারাবাহিকভাবে দেখানো হয়েছে । অন্যদিকে এই বইয়ের সাথে ইলেকট্রনিক্স উপকরণসমূহ সংযুক্ত আছে ।
এর ফলে বইতে শেখা বিষয় সমূহ ব্যবহার করে সফটওয়্যার এর সার্কিট ডিজাইন করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে বইয়ের সাথে যুক্ত উপকরণ সমূহ ব্যবহার করে বাস্তবিক প্রজেক্ট তৈরি করতে পারবেন । এর ফলে ইলেকট্রনিক শেখার জন্য একজন পাঠক সমন্বিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারবেন এবং থিওরি ও প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান এর সমন্বয় ঘটনার মাধ্যমে সহজে ইলেকট্রনিক সেখার কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবেন । এর ফলে এই বইটি ব্যবহার করার মাধ্যমে ছাত্ররা সহজে তাদের ক্লাসের ইলেকট্রনিক সম্পর্কিত থিওরি গুলো বুঝতে পারবে এবং সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত প্র্যাকটিক্যাল ধারণা অর্জন করতে পারবে । অন্যদিকে এই বইটি ব্যবহার করার মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স এর সাথে সম্পর্কিত টেকনিশিয়ান এবং প্রফেশনাল ব্যক্তিরা তাদের ব্যবহারই কাজগুলো কিভাবে সম্পাদিত হয় সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবেন এবং এগুলো তাদেরকে আরো ভালোভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং নতুন কাজের স্কোপ তৈরি করতে সাহায্য করবে । সাথে সাথে ইলেকট্রনিক বিষয়ের প্রতি আগ্রহী হবিষ্ট রা এই বইটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের নতুন প্রজেক্ট ডিজাইন এবং সেগুলো নির্মাণ করার সক্ষমতা অর্জন করবেন এবং এগুলো তাদের ইলেকট্রনিক্স শেখার যাত্রাকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে প্রভাবিত করবে