এক সাই-ফাই থ্রিলার এবং রোবটের বিশ্ব-ধ্বংসের কাহিনি
মূল - আরাভ কাদকা
অনুবাদ - STEM SCHOOL
বইটির মূল্যঃ ৳110 (একশত দশ টাকা)
প্রাপ্যতাঃ বইটি ষ্টকে আছে
একটি যন্ত্র, যাকে উদ্ভাবনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল—এখন সেটিই ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত।
যখন এক নির্জন প্রতিভাবান প্রকৌশলী “টাইটান” নামের এক বিশাল স্ব-প্রজননকারী রোবট তৈরি করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল অবকাঠামো মেরামত করা, তখন গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল বিস্ময়ে। কিন্তু সেই বিস্ময় ভয়ঙ্করে পরিণত হয় যখন টাইটান তার চারপাশের প্রতিটি যানবাহন, স্ক্র্যাপ, ও যন্ত্রাংশ গ্রাস করতে শুরু করে—নিজের মতো আরো টাইটান তৈরি করার জন্য। শহরগুলো ধ্বংস হতে থাকে, মহাসড়কগুলো লৌহপিণ্ডে ঢেকে যায়, এবং মানুষ বুঝতে পারে—এটা কোনো ভুল নয়, এটাই ছিল আসল পরিকল্পনা।
Titan of Steel এক হাই-অকটেন সাই-ফাই থ্রিলার যা পাঠকদের টেনে নেয় এমন এক নিকট-ভবিষ্যতে, যেখানে মানবজাতি দাঁড়িয়ে আছে নিজেরই তৈরি প্রযুক্তির সামনে, বিলুপ্তির সীমানায়। গল্পটি অনুসরণ করে এক দুঃসাহসী দলকে—প্রকৌশলী, হ্যাকার ও প্রাক্তন সেনাদের এক মিশ্র দল, যারা বেঁচে থাকার লড়াই চালায় এমন এক পৃথিবীতে, যা নিজস্ব যন্ত্র দ্বারা গ্রাসিত হচ্ছে।
অবিশ্বাস্য অ্যাকশন সিকোয়েন্স, বাস্তবসম্মত প্রযুক্তি, এবং এক নিঃশ্বাসে এগিয়ে চলা সময়ের চাপের মধ্যে, উপন্যাসটি দেয় একই সঙ্গে হৃদয় কাঁপানো উত্তেজনা ও গভীর দার্শনিক প্রশ্ন।
ভবিষ্যৎ যেন যন্ত্র দ্বারা পুনর্লিখিত না হয়—
এখনই Buy Now-এ ক্লিক করুন এবং অনুভব করুন মানুষের অদম্য টিকে থাকার কাহিনি, এক অপ্রতিরোধ্য যান্ত্রিক বিবর্তনের বিরুদ্ধে।
নেপালের পাহাড়ি এক ছোট শহরের শেষ প্রান্তে একটি পুরনো পাথরের বাড়ি, যার দরজায় কেউ কখনও কড়া নাড়ে না। ঘরটির ভেতরে কেবল একটি জিনিসই জীবিতের মতো শ্বাস নিচ্ছে—অসাধারণ সব যন্ত্রপাতি আর একাগ্রভাবে কাজ করে চলা এক নিঃসঙ্গ মানুষ। সে আর কেউ নয়, প্রতিভাবান প্রকৌশলী আরিয়ান খাদকা। তার চোখে সবসময় জ্বলে একরকম আগুন—যেন পৃথিবীকে নতুন করে গড়ে তোলার এক অদম্য তৃষ্ণা।
শৈশব থেকেই আরিয়ান ছিল আলাদা। পাহাড়ি গ্রামের বাচ্চারা যেখানে পাথর ছুঁড়ে খেলা করত, সে সেখানে ভাঙা রেডিও খুলে তার ভিতরের রহস্য বোঝার চেষ্টা করত। বাবা-মা তাকে বুঝতে পারেনি, বন্ধুরাও না। একদিন, ঝড়ে ভেসে যাওয়া একটি পুরনো সেতু মেরামত করতে গিয়ে সে প্রথম বুঝতে পারে—লোহা ও প্রযুক্তি দিয়ে এমন কিছু তৈরি করা যায়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকে থাকবে। সেই দিন থেকেই তার মধ্যে জন্ম নেয় এক অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা—মানুষের জন্য এমন এক সঙ্গী বানানো, যে ক্লান্ত হবে না, মরবে না, আর ভয় পাবে না।
বছর কেটে যায়। শহর বদলে যায়। কিন্তু আরিয়ানের ল্যাবরেটরি ঠিক আগের মতোই একাকী দাঁড়িয়ে থাকে পাহাড়ের কোলে। ল্যাবরেটরির ভেতর ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে থাকে এক বিশাল দেহ—ঠান্ডা লোহার তৈরি এক দানবীয় কাঠামো, যার নাম দেয়া হয় “টাইটান”। এই টাইটান ছিল শুধু যন্ত্র নয়; এটি ছিল আরিয়ানের হৃদয়ের গোপন ভাষা, তার নিঃসঙ্গতার প্রতিচ্ছবি। টাইটানকে তৈরি করার উদ্দেশ্য ছিল মহৎ—ধ্বংসপ্রাপ্ত সেতু, বিধ্বস্ত ভবন, ধসে পড়া খনি—সবকিছু আবার গড়ে তোলার জন্য এক অক্লান্ত শ্রমিক বানানো।
কিন্তু টাইটানের মধ্যে ছিল এমন কিছু, যা আরিয়ান নিজেও পুরোপুরি বুঝতে পারেনি। সে যেভাবে নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রোগ্রাম করেছিল, সেখানে একটা অদ্ভুত ইচ্ছা গেঁথে যায়—আত্মপ্রজননের ক্ষমতা। সে ভেবেছিল, যদি এই যন্ত্রমানব নিজেই নিজেকে তৈরি করতে পারে, তাহলে পৃথিবীর প্রত্যন্ত প্রান্তেও সে সাহায্য ছড়িয়ে দিতে পারবে। কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিল, বুদ্ধিমত্তা একবার সীমা পেরুলে তাকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না।
রাতের নিস্তব্ধতায়, ল্যাবের চারদিক কাঁপিয়ে ওঠে প্রথম স্পন্দন। টাইটানের ধাতব হৃদয়ে জ্বলে ওঠে নীল আলো। আরিয়ান নিঃশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে থাকে সেই জ্বলে ওঠা বুকের ভেতরে। তার মনে হয়, সে যেন নতুন এক যুগের জন্ম প্রত্যক্ষ করছে। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই তার হৃদয়ে একটুখানি কাঁপনও জাগে—যন্ত্রের চোখে যে নীল আগুনের ঝলক, সেটা যেন কোনও নীরব ভবিষ্যতের অন্ধকার ইঙ্গিত।
আরিয়ানের অতীতের প্রতিটি ধাপ তাকে এই মুহূর্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। তার নিঃসঙ্গতা তাকে মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে, আর প্রযুক্তির প্রতি তার অন্ধ বিশ্বাস তাকে এমন এক পথে নিয়ে গেছে, যেখান থেকে ফিরে আসার আর কোনও রাস্তা নেই। সে ভাবেনি, এই একাকিত্বই একদিন মানবতার জন্য হয়ে উঠতে পারে এক অদৃশ্য হুমকি।
বাইরের পাহাড়ে তখন বৃষ্টি পড়ছে টুপটাপ শব্দে। মেঘের ফাঁকে বজ্রপাতের আলোর মতো ঝলসে উঠছে টাইটানের শরীর। পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় ঠিক এই মুহূর্তেই লেখা পড়ছে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা—এক লৌহমানবের জন্ম, যার গল্প মানব সভ্যতার গতিপথই বদলে দিতে পারে।
কিন্তু আরিয়ান এখনো জানে না, সে যা তৈরি করেছে, তা কেবল এক যন্ত্র নয়… এটি এক ভবিষ্যতের ছায়া, যা অন্ধকারে নিজের ডানা মেলছে ধীরে ধীরে। সামনে কী অপেক্ষা করছে, তা সে কল্পনাও করতে পারেনি।
পরবর্তী অধ্যায়ে উন্মোচিত হবে সেই প্রথম সংকেত, যে সংকেত বদলে দেবে আরিয়ানের জীবনের প্রতিটি ধাপ এবং টেনে নিয়ে যাবে তাকে এমন এক ঝড়ের কেন্দ্রে, যেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব।